Sunday, February 10, 2013

আমার ঘর

আমার একচিলতে ঘর আছে যার মালিক এক ইথারকন্যা । ধরণীর ক্লান্ত  সরণি বেয়ে এসে পৌঁছেছি আমি সেই ঘরে ।
আমি ছাড়াও সেইঘরে আছে আমার প্রিয় মুখ আর নিকট বৃত্ত ।
ঘরের পাশে একফালি বারান্দায় পড়ে ভোরের রোদ্দুর । মাথায়  পাকা ছাদ, ঝমঝম বৃষ্টি পড়ে যার ওপর ।
ঘরের  চৌকো জানলার গরাদ ধরে, বিকিনি পর্দা সরিয়ে আমি থাকি শরতের শিউলিঝরায়, গ্রীষ্মের রোদের আঁচে আর বর্ষার কালোমেঘের চোখরাঙানিতে । 

ঘরের বাইরে লাল মোরামের বর্ডার দেওয়া টিয়াসবুজ ঘাসের ফরাসে পা দিয়ে আমি হেমন্তের শিশিরের শব্দ পাই । 
আর বসন্তের কোকিল যখন ঘরের লাগোয়া সজনেগাছের ডালে বসে ডাক দেয়, সজনেফুলের গন্ধে ম ম করে ঘরের আশপাশ   তখন আমি ঘর করি সেই ইথারকন্যার সাথে  যার নাম কবিতা ।
আমার ঐ ঘরেই তার সাথে সারাক্ষণের ওঠাবসা, ভালোলাগা, মন্দলাগা। কবিতার সাথে সহবাস আবার সহমরণও । 
আর ঐ ঘরেরই জন্ম নেয় আমার ও কবিতার অপত্য ভ্রূণেরা... শব্দকণা হয়ে যারা ঝরে পড়ে টুপটাপ ঘরের মাটিতে, দেওয়ালে, আনাচেকানাচে.....  সেই আমার অর্ধেক আকাশ,  একভুবন আলো করা ঘরে....  
ভাগ্যি কবিতা ছিল সাথে ।  পেলাম মুক্তির ঠিকানা, তেপান্তর পেরোণো সেই আলোর মুক্তি  ।
আর ভাগ্যি ছিলি এই পোড়া ঘর আমার! বসত করেও সুখ পেলাম আমরা দুটিতে ।   

No comments:

Post a Comment