Friday, March 22, 2013

সেদিন চৈত্রমাস!




অনেকগুলো চৈতালী ভোর পেরিয়েও এমন সর্বনাশের ইশারা পাইনি । আজ ছাইরঙা কুয়াশার ভোরে হাঁটতে হাঁটতে পিচের পাকা রাস্তায় । দুপাশের শিমূল পলাশের সঙ্গী মহুয়া । মহুয়া সুখী ফুল ।  ফুল থেকে সবজে হলুদ ফলটুকুনিও ঝরে পড়ে  মনের সুখে  ।  সেই মহুয়া সরণী ধরে পথ চলায় যে মাদকতা, তা পেয়েছি আজকের ভোরে । হলুদ ফরাস পাতা  মহুয়া সরণী বেয়ে চলেছি আর পাশের গাঁয়ের আবালবৃদ্ধবণিতার কোঁচোড় ভরে সেই মহুয়া ফল কুড়িয়ে নেওয়া দেখে মন পৌঁছে গেল সেই লালপাহাড়ির দেশে...    

এবার পুজোতে বোলপুরে একদল মাদল নাচিয়ের সাথে আলাপ জমেছিল ।  ওরা শ্যামলা গাঁয়ের শ্যামলা একদল মেয়ে । সাথে কয়েকজনের মরদ। ওদের চিকন কালো চুল, খোঁপায় বাঁধা বকের পালক, হলুদ গাঁদার ফুল, রূপোর শুলগা । লম্বাটে চোঙাকৃতির "মাদল" তালযন্ত্রটিকে  আর গোলাকার তবলার মত "লাগড়া" বাদ্যযন্ত্রটিকে নিয়ে ওরা নাচে আর গান তৈরী করে । আর ওদের গান সৃষ্টির মূলে হল  চৈত্রমাসের মহুয়া উত্সব । মহুয়ার মৌ জমে ওঠে ওদের ঘরে ঘরে আর ওরা নাচে, গান করে । আজকের মহুয়া কুড়োনোর সেই ছবিটা দেখে বুকে সেই মাদল বাজার শব্দ পেলাম । 
আর মনে মনে বলে উঠলাম


 "ও মেয়ে  তুই কুথা যাস রাঙামাটির পরে
ধামসা মাদল, মহুয়া ফুল কুথায় আছে ঘরে ? "      


আজকের চৈতী ভোর উসকে দিল আমার বসন্তকে আরো একবার!  


Friday, March 15, 2013

আমার জীবনের তুমিরা !

আমার জীবনপাত্র উথলে উঠেছে  মনে দাগ কাটার মত অনেক "তুমি"র জন্যে ।  তাই তুমির কথা বলতে গেলে কাকে ছেড়ে কার কথা বলি!
ছোট্টবেলায় মায়ের শাসন থেকে রেহাই পেতে ঠাম্মাবুড়ির সাথে পুতুলের বিয়ে দেওয়া, রুটি বেলার খেলাখেলির সময় মনে হত  "থাক্‌না এই মানুষটা আমার সারাটা জীবন ভোর "তুমি" হয়ে !"
তারপর যখন উচ্চমাধ্যমিকের গন্ডী পেরিয়ে কলেজে পা দেওয়া তখন বিজ্ঞান-প্রেমে হাবুডুবু আমার "তুমি" হয়ে উঠল কেমিষ্ট্রি, জীবনের ধ্যানজ্ঞান । স্নাতকোত্তর পার হল বিশ্ববিদ্যালয়ে দস্তুর মত দ্বিতীয় স্থান সেই "তুমি"কে ঘিরেই ।  তারপর সবকিছু ওলটপালট !
ছেঁডাছেঁড়া কবিতারা এল আমার সেই "তুমি" হয়ে.... ঘুমঘোরে পদ্যপুর পাড়ি দিলাম  । সঙ্গের সাথী হল সেই "তুমি"রা । গদ্য-পদ্যের জগত ঘিরে কত "তুমি" সেখানে!  এছাড়া আমার "তুমি"র লিস্টিতে ব্যালকনির টব-বাগানের তরতাজা ফুলগুলো অথবা অলসদুপুরের খুনসুটির সাথী সেই কাঠবিড়ালী অথবা বসন্তবৌরীরা থেকেই গেছে মনের খোরাকের "তুমি" হয়ে ।
রক্তমাংসের "তুমি" এল জীবনে  । তাকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন ডাউনলোডিং হৈ হৈ করে ব্যান্ডাউইডথ পুড়িয়ে । জীবন-কেমিষ্ট্রি বদলে দিল  সেই "তুমি"র মা ডাক।
আবার ঋতুচক্রের ঝরাপাতায় ফাগুনের ফেসবুক দিল কিছু ম্যাজিক-মূহুর্ত । তখন অনেক "তুমি" ভালোলাগার, ওঠাবসার সঙ্গী । যেমন সন্ধ্যেবেলার "তুমি" বা ভোরের আলোর অন্য "তুমি"রা ।  
আর আছে আমার চারপাশে সেই অদৃশ্য "তুমি" যে আমার কোঅর্ডিনেটর, সঞ্চালিকা যাই বলো । 

Monday, March 4, 2013

কন্যে আমি

আবার আমায় নাও না কোলে তুলে কিম্বা নাহয় ঠাঁই দাও মাগো তোমার জরায়ুতে,
এবার দশ-মাস দশ-দিন নয়, থাকবো মাগো সারাজীবন ধরে । 
এই সমাজের চেয়ে বোধহয় ভালো ছিল তোমার পেটের ভেতরটা,
শোণিত-লোহিতকণার মাঝে রক্তমাংস'দলাটা ।
তবুও তো আমি সুরক্ষিত সেখানে
ভিতর-বাহিরে অন্তরে অন্তরে ঠিক যেমনি ছিলাম
তোমার মনের মাঝখানে ।