Thursday, April 9, 2015

" ডাকনাম"




মা ডাকত পুঁটুরাণী, বাবা কেবলি পুঁটু।

রূপসোনা বলি আমি তাকে, যদিও দৃষ্টিকটু ।

তিনটি মেয়ের একটি, যদিও ছেলে আছে দু'টি ।

ঠাম্মা ডাকত আদর করে সুভদ্দোরা,

দিদা মিলিয়ে দিয়েছিল যশোধরা।

শরীর জুড়ে তিল ছিল মেয়ের, তাই স্কুলের নাম তিলোত্তমা ।

মিষ্টি চেহারার জন্য দাদামশাই বলতেন মনোরমা ।

মায়ের জুটল রাঁধুনির কাজ, মোটের ওপর এতগুলো পেট,

এই বাজারে পোষায় কি আর ? বাবার যে বন্ধ জুটমিলের গেট।

পুঁটুরাণী সবচেয়ে সুন্দরী, নাকমাটা মাটা, চোখ হাসে তার,

গায়ের রং গম-পানা, মুখটি পানপাতার। বাবা দিল পাঠিয়ে ভিনরাজ্যে ।

প্রচুর টাকার বিনিময়ে, অভাবের তাড়নায়...

পুঁটু হল গিয়ে একালের দেবদাসী। ডাকনাম সবিতা ।

এবার শুরু মেয়ের জীবনে নতুন নাটক-কবিতা।

কোন্‌ এক বাবুর মন্দিরে সে নাচত-গাইত, ফুলের মত ঢলে পড়ত

কৃষ্ণসেবা দিনের বেলায়, রাতে লম্পট বাবুর বিছানায় ।

বাবু ডাকত কত্ত নামে। পুঁটুর কি আর নামের অভাব!

সেই ছোট্ট থেকে আদর ! মা-বাবা-ঠাম্মা-দিদার!

ডাগোরডোগর মেয়েটা এখন বাবুর আদরের মোনা

আমি বাপু তারে ডাকি আমার রূপসোনা।