ধর্ষণের পর
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়
৯৮৩১০৩৮০৬৬
কানাঘুষো
সেই মেয়েটির কী হয়েছে? মারা গেল যে কোভিডে
কোভিড তো নয়, মরেছে সে মারাত্মক এক গ্যাং-রেপে।
বলছে সবাই গাঁয়ের লোকে, কোভিডই তো হয়েছিল।
ঢাকাচাপা আর কদ্দিন? আকাশও সেদিন কাঁদছিল।
আর ঐ মেয়েটা? বাসে চেপে সেদিন যে ঘর ফিরছিল?
ভরদুপুরে সে মেয়ের ওপরও কুকুরগুলো চড়াও হল।
কুকুর? থুড়ি কুকুর তো নয় নোংরা ক'টা লোক ছিল
লোকগুলোরও দাদাগিরির মজা লোটার সাধ হল।
সস্তা মেয়ে, ধ্বস্ত মেয়ে, কব্জা করে ভারি আরাম
হাড়েগোড়ে লুঠতে শরীর, ঠুনকো শরীর নেই যে দাম।
ধর্ষিতা
স্তব্ধ, শূন্য দ্বীপের মধ্যে রিক্ত আমি ধর্ষিতা
ক্লান্ত, শ্রান্ত একা মেয়ের সঙ্গী তখন নির্জনতা।
লজ্জা? ছিল আমার ভূষণ। গর্ব? ছিল মেয়ে বলে
তবুও তো আমি সব খুইয়ে, ভাবছি সব আজ গেছে চলে।
রক্তমাংস এত ভালোবাস? ভালোবাস তাই দাদাগিরি
নারী শরীরের রক্তমাংস নিয়ে তাই কর কাড়াকাড়ি।
ক্ষমতা দেখাও ধর্ষক?
ইজ্জত নিয়ে টানাটানি কর, মেয়ে শরীরের দর্শক।
পুরুষ নাকি বীর্যবান?
বোধহয় তোমার অন্যজাত, শুধুই শক্তিমান।
কা-পুরুষ অথবা না-পুরুষ নাকি লিঙ্গ চতুর্থ সেক্স?
ধর্ষকলিঙ্গ বোধহয় আলাদা, পাইরেটেড, ট্রিপল এক্স।
শিখেছিলাম তো একলা চলো, একলা চলো রে
একলা পথে হেঁটেছিলাম। চিত্ত উতলা করে।
ওড়না আমার ত্রস্ত হয়েছে, চুনরীতে কিছু দাগ
পারবনা আর একলা চলতে? দ্বীপে বসিও না ভাগ।
জন্মলগ্নে পাপগ্রহ ছিল, গোচরে মনখারাপ
পূর্ণিমার সাথে আড়ি, অমাবস্যার সাথে ভাব।
ধর্ষিতার পরিবার
তারা ধর্ষক, ঘটনা ঘটাতে ওস্তাদ! লোমহর্ষক, চিত্তাকর্ষক !
তারা একটা ক্লাস! নারীর শরীর যাদের কাছে নিছক কাঁচের গ্লাস!
গুঁড়িয়ে দিয়ে মাটির ওপরে, থেঁতলে দিয়ে শরীর
কত মজাই না লুটলে পুরুষ, ভোগের কিম্বা বলির।