ভাঙলো কি ঘুম শহরবাসীর? জাগলে কি দশভুজা?
তোমার জন্য শিউলি কুড়োই, বাবুর বাড়ির পূজা। ফুলও তুলি, পুজোঘর ধুই, তেনাদের আজ তর্পণ ।
"কোশাকুশি যেন চকচকে হয়" আগেভাগেই সে গর্জন ।
হ্যাঁগো মাদুর্গা? তোমার তো দিব্য দশটিহাতের জোর।
দশভুজা আমি কখন দেখব মহালয়ার এ ভোর?
আমিও দুর্গা মহালয়ার আকাশবাণীর ঊষায়
ধড়মড়িয়ে চোখ রেখেছি ছোট্ট ঘড়ির কাঁটায় ।
"জাগোদুর্গা" ডাক দিলো ঐ, দশভুজার মন্ত্রে
সবজী কাটি, মশলা পিষি, কাজের যন্ত্রেতন্ত্রে ।
আমিও দুর্গা বুঝতে পারি মহালয়া এলো
দূর থেকে দেখতে যে পাই আগমনীর আলো।
পোড়া কড়াই, ডেকচি হাঁড়ির ঝনঝনানি শব্দে
বাজলো বুঝি আলোর বেণু? "বাসনগুলো ধুয়ে দে!"
আমিও দুর্গা ভোর ভরেছি রঙ্গিন টিভির শোয়ে
"নে, নে এবার ঝাড়াপোঁছা কর, টিভিতে না চেয়ে" ।
আমিও দুর্গা উপু হয়ে বসি এবার সাবানকাচায়
"বুরুশ দিয়ে ঘষিস বাপু" বড্ড ময়লা থাকায়।
আমিও দুর্গা দশভুজা শারদপ্রাতের মেয়ে
দুগ্গাঠাকুর মাথায় ওঠে, দুবেলা দুমুঠো খেয়ে ।
রূপং দেহি? ধ্যুত্তারিকা! ঝিয়ের আবার রূপ?
রূপ-যশ সব দেবার বেলায় দশভুজা চুপ্!
অশ্বিনের শারদপ্রাতের বাদ্যিবাজা হল?
মহালয়ায় ঘুম ভেঙেছে এবার দুর্গা চলো।
শিউলি শিশিরে আমি যে দেখেছি কাজেরবাড়ির দোর।
তুই কি কখনো দেখেছিস মা মহালয়ার ভোর?